অনেকেই শরীরের ওজন কমাতে ডায়েট করতে গিয়ে খাবারে লবণের পরিমাণ কমিয়ে দেন। লবণ শরীরে পানিধারণ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। অনেকেই ভাবেন, এই পানির ওজনই শরীরের ওজন বাড়িয়ে দিচ্ছে।
পুষ্টিবিদ নার্গিস সুলতানার মতে, “এই কথাটা সম্পূর্ণ সত্যি নয়। লবণ খেলে শরীরে পাািনধারণ ক্ষমতা বাড়ে ঠিকই। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, তার থেকে ওজনও অনেকটা বেড়ে যাবে। এমনকি উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় যারা ভোগেন, তাদেরও প্রত্যেক দিন নির্দিষ্ট পরিমাণে লবণ রাখতে হবে খাদ্যতালিকায়।”
প্রতিদিন কতটা লবণ খাবেন?
একজন পূর্ণবয়স্ক সুস্থ মানুষের প্রত্যেক দিন এক চা চামচ লবণ খাওয়া উচিত। পাঁচ-ছয় গ্রাম লবণ খাদ্যতালিকায় রাখাই যায়। তবে কাঁচা লবণ না খেয়ে রান্নায় লবণ দিয়ে খাওয়াই ভাল। অন্যথায় শুকনো খোলায় লবণ নেড়ে, তা খেতে পারেন। বিশেষ করে দীর্ঘদিন উচ্চ রক্তচাপ বা কিডনির সমস্যায় ভুগলে কাঁচা লবণ খাওয়া বন্ধ করতে হবে।
কী লবণ খাবেন?
বাজারে অনেক ধরনের লবণ পাওয়া যায়। প্রত্যেকটিতেই সোডিয়াম থাকে। অনেকেই মনে করেন, সি সল্টে মিনারেল বেশি থাকে, তাই টেবল সল্টের চেয়ে তা বেশি ভালো। পুষ্টিবিদরা জানাচ্ছেন, ‘‘অন্যান্য সল্টের তুলনায় টেবল সল্ট খাওয়া বেশি ভালো। তার কারণ টেবল সল্ট রিফাইনড। বিশেষত মেয়েদের জন্য আয়োডাইজড টেবল সল্ট খাওয়া ভালো।’’ অন্য দিকে সি সল্ট যেহেতু সমুদ্রের পানি বাষ্পীভ‚ত করে তৈরি হয়, তাই মিনারেলের পরিমাণ সমুদ্র অনুসারে পৃথক হয়।
লবণের অভাবে যে সমস্যা হয়
লবণে শতকরা ৯৭-৯৯ ভাগই হল সোডিয়াম ক্লোরাইড। ফলে লবণ খাওয়া বন্ধ করলে প্রথমেই সোডিয়ামের অভাব হবে। এর অভাবে নানা রকমের শারীরিক সমস্যা দেখা দেবে। হুট করে প্রেশার কমে গিয়ে মাথা ঘুরে পড়ে যাওয়ার ঘটনাও বিরল নয়।
মনে রাখতে হবে
⚫ সাধারণ মাখন, চিজ, পাউরুটি ইত্যাদি খাবারে কিছুটা পরিমাণে লবণ থাকে। তাই এই জাতীয় খাবার রোজকার খাদ্যতালিকায় থাকলে অন্য খাবারে লবণের পরিমাণ সম্পর্কে সচেতন হতে হবে।
⚫ যাঁরা রোজ কায়িক শ্রম বা ব্যায়াম বেশি করেন, তারা পুষ্টিবিদের পরামর্শমতো খাবারে লবণের পরিমাণ স্থির করুন। কারণ ঘামের মাধ্যমেও শরীর থেকে পানি ও লবণ অনেকটাই বেরিয়ে যায়। ইলেকট্রোলাইট ব্যালান্স কম হলেও বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে লবণের পরিমাণ বাড়াতে হতে পারে।
⚫ বাজারচলতি প্যাকেটজাত খাবার যেমন, চিপস, নাচোজ থেকে শুরু করে হ্যাম, সসেজ, সয় সস, টম্যাটো সসেও লবণ থাকে। এই ধরনের খাবারের বিষয়েও সচেতন হবেন।
মাছ, মাংস বা ডিম থেকেও সোডিয়াম পাওয়া গেলেও প্রতিদিনের চাহিদা তাতে মেটে না। সেখানে অল্প লবণ অনেক সহজেই সেই ঘাটতি পূরণ করে।
শাহেদ কায়সার